ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

সাত দিনের মধ্যে দেশের সব মহাসড়ক দখলমুক্ত করার ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক ::

সাত দিনের নোটিশ দিয়ে দেশের ২২টি জাতীয় মহাসড়ক থেকে ‘অবৈধ দখল’ উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, অবৈধ দখল আর অবৈধ পার্কিং এ দুটো উচ্ছেদে যদি আমরা সফল হতে পারি, তাহলে সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা অনেকটাই ফিরে আসবে। সে কাজটি আমরা হাতে নিয়েছি। গতকাল শুক্রবার দুপুরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের কাজ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে এ ঘোষণা দেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সড়কগুলোকে অবৈধ দখলমুক্ত করব। সাত দিনের নোটিশ দিয়ে সারা বাংলাদেশে কাজটি শুরু হবে। আমি আজকেই এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছি। পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশকে বলা হয়েছে, কোনো অবস্থাতেই অবৈধ পার্কিং অ্যালাউ করা হবে না। খবর বিডিনিউজের।
এদিকে, সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে জাতীয় সংলাপের যে কর্মসূচি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দিয়েছে, তাকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোনো দাবি থাকলে তা সংসদে এসে বলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
কাদের বলেন, দেশের মহাসড়কগুলোতে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার পাশের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে হাট-বাজার, দোকানপাট। কোথাও কোথাও এলোপাতাড়ি গাড়ি রেখে ট্রাক স্ট্যান্ড বানিয়ে ফেলা হয়েছে। এসব অবৈধ স্থাপনা ও ট্রাক স্ট্যান্ডের কারণে সড়ক সংকীর্ণ হচ্ছে এবং ভিড়ের কারণে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমে যাচ্ছে। গাড়ির চাপ সামান্য বাড়লেই তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট, দুর্ঘটনাও ঘটছে অহরহ। গত সাত বছর সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব চালিয়ে আসা ওবায়দুল কাদের এর আগেও বিভিন্ন সময়ে সড়ক অবৈধ দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু অনেক জায়গায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালীদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেটদের। উচ্ছেদ চালানো হলেও অল্প দিনের মধ্যে রাস্তা ফিরে গেছে আগের চেহারায়। নতুন মেয়াদে একই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে তিনি ইতোমধ্যে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন।
চন্দ্রা ত্রিমোড়ে ফ্লাইওভারের কাজ দেখার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জনগণকে স্বস্তি দিতে সড়কে নিরাপত্তার জন্য এটা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এ বার্তাটাই আমি জনগণকে দিতে চাই। তিনি বলেন, মানুষের জীবন আগে, জীবিকা পরে। আমি যদি বাঁচতেই না পারি তাহলে জীবিকার সন্ধান কী করে হবে! গরিব মানুষ জীবিকার কথা আগে ভাবে। কিন্তু তারা জীবনের কথা ভাবে না। ছোট ছোট যানগুলো যখন এঙিডেন্ট হয়, তখন চালক ও আরোহী সকলেই মারা যান। বড় গাড়ির সঙ্গে ছোট গাড়ির একটু টোকা লাগলেই মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটে। বর্তমানে এঙিডেন্টের হার কমে গেলেও মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে।
ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের কথা হাস্যকর
চন্দ্রা ত্রিমোড়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যে নির্বাচন সারা বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে। সেই নির্বাচন নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের জাতীয় সংলাপের দাবি হাস্যকর। ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচিত হয়েও সংসদে না যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা ‘অবৈধ’। এমন ঘোষণায় জনগণের রায়কে তারা অসম্মান করেছে। তারা কী বলল তাতে আমাদের কিছু যায়-আসে না। বাংলাদেশের জনগণ কী বলল, সেটা হলো বড় কথা।
বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ আনলেও ওবায়দুল কাদেরের দাবি, বাংলাদেশের জনগণ বিপুলভাবে ‘উন্নয়ন, গণতন্ত্র, এবং সততার’ পক্ষে রায় দিয়েছে। এমন স্বতস্ফূর্ত রায় এদেশে সত্তরের পর নৌকার পক্ষে এমন গণজোয়ার কেউ আর দেখেনি। এ নির্বাচনকে তারা যদি মনে করে যে সঠিক নয়, সেটা তারা বলতেই পারে। আমরা বলব, এদেশের জনগণ এ নির্বাচনে ভোট দিয়েছে।
এ নির্বাচন নিয়ে পৃথিবীর ‘কোথাও কোনো প্রশ্ন নেই’ দাবি করে কাদের বলেন, যারা আন্দোলনে প্রত্যাখাত, নির্বাচনেও তাদের জনগণ প্রত্যাখান করেছে। এখন তারা নানা দাবি উত্থাপন করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার যত চক্রান্তই করক, বাংলাদেশের জনগণের কাছে এর কোনো আবেদন নেই, সাড়া নেই।

পাঠকের মতামত: